(১) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) তাঁদেরকে (ছাহাবীগণকে) এই দো‘আ শিক্ষা দিতেন, যেভাবে তাঁদেরকে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন,
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিন ‘আযা-বি জাহান্নাম ওয়া আ‘উযুবিকা মিন ‘আযা-বিল ক্ববর, ওয়া আ‘উযুবিকা মিং ফিতনাতিল মাসীহি:দ দাজজা-ল, ওয়া আ‘উযুবিকা মিং ফিত্নাতিল মাহ্:ইয়া- ওয়াল মামা-ত, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিনাল্ মা‘ছামি ওয়া মিনাল মাগ্রম। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট জাহান্নামের আযাব হ’তে আশ্রয় চাচ্ছি, কবরের আযাব হ’তে আশ্রয় চাচ্ছি, আশ্রয় চাচ্ছি কানা দাজ্জালের পরিক্ষা হ’তে। তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি জীবন ও মৃত্যুর পরিক্ষা হ’তে এবং তোমার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি পাপ ও ঋণের বোঝা হ’তে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, পৃঃ ৮৭)। (২) আবুবকর ছিদ্দীক্ব (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি রাসূল (ছাঃ)- কে বললাম, আমাকে একটি দো‘আ শিক্ষা দিন, যা আমি আমার ছালাতের মধ্যে পড়ব। তখ রাসূল (ছাঃ) বললেন, তুমি বল,
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ইন্নী য:লামতু নাফসী যু:লমান কাছীরা-, ওয়ালা- ইয়াগ্ফির“য যুনূবা ইল্লা- আংতা ফার্গ্ফিলী মাগ্ফিরাতাম মিন্ ‘ইন্দিকা ওর্য়াহামনী ইন্নাকা আংতাল গফ‚র“র রহীম। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আমার উপর অত্যধিক অন্যায় করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। ক্ষমা একমাত্র তোমার প¶ থেকে হয়ে থাকে। আমার প্রতি রহম কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল ও দয়ালু’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, পৃঃ ৮৭, হা/৯৩৯)। (৩) আবু মূসা (রাঃ) তার পিতা হ’তে বর্ণনা করেন, তার পিতা বলেন, রাসূল (ছাঃ) এ দো‘আ পড়তেন,
উচ্চারণ : আল্ল-হুম মার্গ্ফিলী মা- ক্বদ্দামতু ওয়ামা- আখখারতু ওয়ামা- আর্স্রতু ওয়ামা- আ‘লান্তু ওয়ামা- আংতা আ‘লামু বিহী মিন্নী, আংতাল মুক্বদ্দিমু ওয়া আংতাল মুওয়াখখির“ লা-ইলা-হা ইল্লা- আংতা। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি যে সব গুনাহ ইতিপূর্বে করেছি এবং যা পরে করব, সব তুমি মাফ করে দাও। মাফ করে দাও সেই পাপরাশি, যা আমি গোপনে করেছি, আর যা প্রকাশ্যে করেছি। মাফ কর আমার সীমালংঘনজনিত পাপ সমূহ এবং সেই সব পাপ, যে পাপ সম্বন্ধে তুমি আমার চেয়ে অধিক জান। তুমি যা চাও, তা আগে কর এবং তুমি যা চাও তা পিছনে কর। তুমি আদি, তুমি অনš—। তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘বূদ নেই’ (মুসলিম, ২য় খন্ড , পৃঃ ৩৪৯)। (৪) সা‘দ ইবনু আবী ওয়াক্কাছ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) নিম্নোক্ত শব্দগুলি দ্বারা পরিত্রাণ চাইতেন।
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নি ওয়া আ‘উযুবিকা মিন্ আন্ উরাদ্দা ইলা র্আযালিল উমুরি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিং ফিৎনাতিদ দুনইয়া ওয়া ‘আউযুবিকা মিন ‘আযাবিল ক্বাব্র। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হ’তে, কাপুর“ষতা হ’তে, বার্ধক্যের চরম দুঃখ-কষ্ট থেকে, দুনিয়ার ফিৎনা-ফাসাদ ও কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪; বুলূগুল মারাম, পৃঃ ৯৬)। মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমার হাত ধরে বললেন, হে মু‘আয! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে ভালবাসি, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমিও আপনাকে ভালবাসি। রসূল (ছাঃ) বললেন, মু‘আয তুমি প্রত্যেক ছালাতের শেষে এই দো‘আটি কখনো ছেড়ো না।
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আ‘ইন্নী ‘আল্লা যিক্রিকা ওয়া শুক্রিকা ওয়া হুস্নি ইবা- দাতিকা। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য কর“ন (আহ্মাদ, আবুদাউদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৪৯, বাংলা মিশকাত হা৮৮৮)। বুরায়দা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) একজন লোককে বলতে শুনলেন,
উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা বিআন্নী আশ্হাদু আন্নাকা আংতাল্ল-হু লাইলা-হা ইল্লা- আংতাল আহাদুস্ স্বমাদুল লাযী লাম্ ইয়ালিদ্ ওয়ালাম্ ইউলাদ্ ওয়ালাম্ ইয়াকুল্লাহূ কুফুওয়ান আহাদ। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট চাই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি একমাত্র তুমিই আল্লাহ। তুমি ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই। তুমি একক অমুখাপেক্ষী। যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম নেননি। তাঁর সমক¶ কেউ নেই’ (আবুদাউদ, বুলূগুল মারাম হা/১৫৬১)। তারপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, অবশ্যই সে আল্লাহর এমন নামে ডেকেছে, যে নামে চাওয়া হলে প্রদান করেন এবং প্রার্থনা করা হলে কবুল করেন। প্রকাশ থাকে যে, ছালাতের মধ্যে সালাম ফিরানোর পূর্বে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ থেকে যে কোন দো‘আ পাঠ করা জায়েয (বুখারী, ‘কিতাবুদ দাওয়াত’ হা/৬৩২৮)। তবে ছালাতের মধ্যে আপন আপন ভাষায় দো‘আ করা যাবে না। এমনকি আরবীতেও নিজের বা কারো বানানো দো‘আও পাঠ করা যাবে না এবং কুরআন ও ছহীহ হাদীছে প্রমাণিত দো‘আগুলির অনুবাদ করে পড়াও চলবে না। কেননা র“সূলুল্লাহ (ছাঃ) মানুষের ভাষাকে ছালাতের মধ্যে নিষেধ করেছেন।
রসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই ছালাত মানুষের কথাবার্তা বলার ¶েত্র নয়। এটাতো কেবল তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন তিলাওয়াতের জন্যই সুনির্দিষ্ট’ (মুসলিম, ‘কিতাবুল মাসাজিদ ও মাওয়াযিউছ ছালাত’, হা/৫৩৭; আবুদাউদ হা/৭৯৫; নাসাঈ, ‘কিতাবুস সাহউ’ হা/১২০৩; আহমাদ হা/২২৬৪৪; দারিমী, ‘কিতাবুছ ছালাত’ হা/১৪৬৪; বুলূগুল মারাম, ‘কিতাবুছ ছালাত’ হা/২১৭)।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন