(১) রসূলুল্লাহ (ছাঃ) সালাম ফিরানোর পর একবার (আল্লাহু আকবার) বলতেন (বুখারী, ১ম খন্ড, ‘সালাম ফিরানোর পর যিকির’ অনুচ্ছেদ)। (২) ছাওবান (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) ছালাত শেষে তিনবার ক্ষমা চাইতেন অর্থাৎ (আস্তাগ্ফির“ল্ল-হ, আস্তাগ্ফির“ল্ল-হ, আস্তাগ্ফির“ল্ল-হ) (আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি) বলতেন। অতঃপর বলতেন, উচ্চারণ : আল্ল-হুম্মা আংতাস সালা-মু ওয়া মিংকাস সালা-মু তাবা-রাক্তা ইয়াযাল্ জালা-লি ওয়াল্ ইকরা-ম। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি শান্তি—ময়। তোমার নিকট থেকেই শান্তি—র আগমন। তুমি বরকতময়, হে প্রতাপ ও সম্মানের অধিকারী!’ (মুসলিম, মিশকাত, পৃঃ ৮৮)। (৩) মুগীরা (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর বলতেন,
উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্:দাহূ লা- শারীকা লাহু লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা- কুলি− শাইয়িং ক্বদীর, আল্ল-হুম্মা লা- মা-নি‘আ লিমা- আ‘ত্বাইতা ওয়ালা- মু‘ত্বিয়া লিমা- মানা‘তা ওয়ালা- ইয়াংফাউ যাল জাদ্দি মিংকাল জাদ্দ। অর্থ : ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই রাজত্ব, তাঁরই প্রশংসা এবং তিনি সর্বশক্তিমান। হে আল্লাহ! তুমি যা প্রদানের ইচ্ছা কর, তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারে না এবং তুমি যাতে বাধা দাও, তা কেউ প্রদান করতে পারে না এবং কোন সম্পদশালীর সম্পদই তোমার নিকট তাকে রক্ষা করতে পারে না’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, পৃঃ ৮৮)। (৪) আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখন ছালাতের সালাম ফিরাতেন, তখন উচ্চৈঃস্বরে বলতেন,
উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ:দাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা- কুলি− শাইয়িং ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়ালাকুউওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহি লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা- না‘বুদু ইল্লা- ইয়্যা-হু লাহুন নি‘মাতু ওয়া লাহুল ফায্লু ওয়া লাহুছ ছানাউল হাসনু লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলিস্বীনা লাহুদ দীন, ওয়ালাও কারিহাল কাফিরূন।
অর্থ : ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর, প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্বশক্তিমান। আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নেই। আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই। আমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি। নে‘মত তাঁর, তাঁরই অনুগ্রহ এবং তাঁরই উত্তম প্রশংসা। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। দ্বীনকে আমরা একমাত্র তাঁরই জন্য মনে করি, যদিও কাফেররা অপসন্দ করে’ (মুসলিম, মিশকাত, পৃঃ ৮৮, হা/৯৬৩)। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি প্রত্যেক ছালাতের পর ৩৩ বার (সুব্হানাল্ল-হ) (আল্লাহ পরম পবিত্র), ৩৩ (আলহামদুলিল্লা-হ) (সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য), ৩৩ বার (আল্ল-হু আকবার) (আল্লাহ মহান) এবং নিম্নোক্ত দো‘আ একবার বলে, তাহ’লে তার সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনা সমতুল্যও হয়’ (মুসলিম, ১ম খন্ড, হা/৪১৮; মিশকাত হা/৯৬৭)। উচ্চারণ : লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহ্:দাহূ লা- শারীকা লাহু লাহুল্ মুল্কু ওয়া লাহুল্ হামদু ওয়া হুয়া ‘আলা- কুলি− শাইয়িং ক্বদীর। অর্থ : ‘আল্লাহ ব্যতীত ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘বূদ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁর এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান’। রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) প্রত্যেক ছালাতের শেষে সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস একবার করে পড়তেন। আর মাগরিব ও ফজরের ছালাতের পর তিনবার করে পড়তেন’ (আবুদাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী, হিছনুল মুসলিম, পৃঃ ৪৩; মিশকাত হা/৯৮৯)। রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) প্রত্যেক ছালাতের শেষে সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস একবার করে পড়তেন (আহমাদ, আবুদাউদ, বায়হাক্বী, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৯৬৭ ‘ছালাতের পর যিকির’ অনুচ্ছেদ)। আর ইখলাছ সহ মাগরিব ও ফজরের ছালাতের পর তিনবার করে পড়তেন (আবুদাউদ, নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৬৩)। উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আ‘ইন্নী ‘আল্লা যিক্রিকা ওয়া শুক্রিকা ওয়া হুস্নি ইবা- দাতিকা। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন’ (আহ্মাদ, আবুদাউদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৪৯, বাংলা মিশকাত হা৮৮৮)। উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল জুব্নি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিনাল বুখ্লি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন আরযালিল ‘উমুরি ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিং ফিৎনাতিদ দুনইয়া ওয়া ‘আযা-বিল ক্বাব্রি। অর্থ : ‘হে আল্লাহ আমি আপনার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি কাপুর“ষতা হ’তে কৃপণতা হ’তে, অতি বার্ধক্যে পৌঁছে যাওয়া হ’তে। আপনার আশ্রয় প্রর্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হ’তে ও কবরের আযাব হ’তে’ (বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪)। উচ্চারণ : সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী ‘আদাদা খালক্বিহী ওয়া রিযা নাফ্সিহী ওয়া যিনাতা ‘র্আশিহী ওয়া মিদা-দা কালেমা-তিহী। অর্থ : ‘আমি আল্লাহর মহত্ত¡ প্রশংসা জ্ঞাপন করছি তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তুষ্টির সমতুল্য এবং তাঁর আরশের ওযন ও কালেমা সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৩০১)।
উচ্চারণ : রাযীতু বিল্লাহি রাব্বাওঁ ওয়া বিল ইস্লা-মি দ্বীনাওঁ ওয়া বিমুহাম্মাাদিন্ নাবিইয়া (৩ বার)। অর্থ : ‘আমি সন্তুষ্টহয়ে গেলাম আল্লাহর উপরে প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামের উপরে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মাদের উপরে নবী হিসাবে’ (আহ্মাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২৩৯৯)।
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আর্জিনী মিনান্ না-রি (৭ বার)। অর্থ : ‘হে আল্লাহ্ তুমি আমাকে জাহান্নাম থেকে পানাহ দাও’! (আহ্মাদ, নাসাঈ, ইবনু হিব্বান, তানক্বীহ শরহে মিশকাত ২/৯৩, সনদে কোন দোষ নেই)। উচ্চারণ : লা-হাওলা ওয়ালা ক্বওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হি। অর্থ : ‘নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি, আল্লাহ ব্যতীত’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৩০২)।
উচ্চারণ : সুব্হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী ওয়া সুব্হা-নাল্লা-হিল ‘আযীম। অর্থ : ‘আল্লাহর প্রশংসা সহকারে পবিত্রতা পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং মহান আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি’। এই দো‘আ পাঠের ফলে তার সকল গোনাহ্ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয় (মুত্তাফাক্ব আলাইহ্, মিশকাত হা/২২৯৬-৯৮)। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে “সুব্হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী” পড়বে।
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মাক্ফিনী বিহালা-লিকা ‘আন হারা-মিকা ওয়া আগ্নিনী বিফায্লিকা আম্মাং সিওয়া-কা। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট কর“ন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের হ’তে মুখাপে¶ীহীন করুন’! রাসূল (ছাঃ) বলেন, পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন (তিরমিযী, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/২৪৪৯)। উচ্চারণ : আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা-ইলা-হা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূম ওয়া আত‚বু ইলাইহি। অর্থ : ‘আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও সবকিছুর ধারক। আমি তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তাওবা করছি। এই দো‘আ পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়। রাসূল (ছাঃ) দৈনিক ১০০ বার তওবা করতেন (ছহীহ তিরমিযী, হা/২৮৩১)
আ-য়া-তুল কুরসী : আল্ল-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূম। লা-তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহ‚ মা- ফিস্সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরযি। মাংযাল্লাযী ইয়াশ্ফা‘উ ইংদাহ‚ ইল্লা বিইয্নিহী, ইয়া‘লামু মা বাইনা আইদীহিম ওয়া মা-খাল্ফাহুম ওয়ালা-ইউহীত্বূনা বিশাইয়িম্ মিন ‘ইলমিহী ইল্লা-বিমা শা-আ ওয়াসি‘আ র্কুসিইয়ুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযা, ওয়ালা-ইয়াউদুহ‚ হি:ফ্যুহুমা ওয়া হুয়াল ‘আলিইয়ুল ‘আযীম (বাক্বারাহ ২৫৫)। অর্থ : আল্লাহ্ তিনি, যিনি ব্যতীত (প্রকৃত) কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও সবকিছুর ধারক। কোন রূপ তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে স্পর্শ করে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে, সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁর নিকটে সুপারিশ করতে পারে? তাঁদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হ’তে তারা কিছুই আয়ত্ব করতে পারে না, কেবল যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর আরশ (সিংহাসন) সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলোর রক্ষণাবে¶ণ তাঁকে মোটেই শ্রাš— করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও সর্বাপে¶া মহান’। রাসূল (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না, মৃত্যু ব্যতীত (নাসাঈ)। শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযুক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হ’তে না পারে (বুখারী)। রাসুলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাতের পর ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করতেন (নাসাঈ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২)।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন